Aassalamu alikum how are you I hope you are all well. All the praise to Allah subhanahu oatala.I am Abu Saeid Studying MS in Food Processing and Preservation in Hajee Muhammad Danesh Science and Technology University, Dinajpur. Stay in Zia hall room no#226# 1st floor in HSTU campus, Basher hat, Dinajpur.

POSTS\\\\

Tuesday, March 19, 2013

হযরত জয়নাব (সা.আ.) এর শুভ জন্মবার্ষিকী

রবিবার, 17 মার্চ 2013 15:30
হযরত জয়নাব (সা.আ.) এর শুভ জন্মবার্ষিকী

হযরত জয়নাব (সা.) র শুভ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আপনাদের সবার প্রতি রইল অনেক অনেক অভিনন্দন। এমন এক মহিয়সী রমণী ছিলেন তিনি,যাঁর সম্মান-মর্যাদা আর সাহসী ভূমিকার ঐশ্বর্যে ইসলামের ইতিহাসের পাতা স্বর্ণোজ্জ্বল হয়ে আছে।

হযরত জয়নাব (সা.) ষষ্ঠ হিজরীর ৫ই জমাদিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন হযরত আলী (আ.) এবং হযরত ফাতেমা (সা.) এর তৃতীয় সন্তান। তাঁর জন্মের সময় নবীজী সফরে ছিলেন। তাই তাঁর মা ফাতেমা (সা.) আলী (আ.) কে মেয়ের জন্যে একটা ভালো নাম দিতে বললেন। কিন্তু হযরত আলী (আ.) এটা নবীজীর জন্যে রেখে দিলেন এবং নবীজীর সফর থেকে ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললেন। নবীজী যখন সফর থেকে ফিরে এলেন তখন এই কন্যার জন্মের সংবাদে খুশি হয়ে বললেন: "আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন,এই কন্যার নাম রাখো জয়নাব অর্থাৎ বাবার অলংকার। রাসূলে খোদা (সা.) জয়নাবকে কোলে নিয়ে চুমু খেয়ে বললেন-সবার উদ্দেশ্যে বলছি,এই মেয়েটিকে সম্মান করবে,কেননা সে-ও খাদিজার মতো। "

ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে যে,সত্যি-সত্যিই জয়নাব (সা.) খাদিজা (সা.) র মতোই ইসলামের দুর্গম পথে অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন এবং দ্বীনের সত্যতাকে তুলে ধরার জন্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন।

জয়নাব (সা.) তাঁর জীবন শুরু করেন এক আধ্যাত্মিকতার পরিবেশপূর্ণ পরিবারে। কেননা এই পরিবার রাসূলে খোদা (সা.),আলী (আ.) এবং ফাতেমা (সা.) এর মতো মহান ব্যক্তিত্ববর্গের অস্তিত্বের সান্নিধ্য পেয়ে ধন্য হয়েছে,পবিত্র হয়েছে। এঁরা ছিলেন পূত-পবিত্র জীবনের অধিকারী এবং মানবীয় মর্যাদা ও ফযিলতের গোড়াপত্তনকারী। জয়নাব (সা.) সেই শিশুকাল থেকেই প্রত্যুৎপন্নমতি ছিলেন এবং আধ্যাত্মিকতাপূর্ণ মনের অধিকারী ছিলেন। সেই ছোট্ট বেলায় তিনি একবার তাঁর মা ফাতেমা (সা.) এর গুরুত্বপূর্ণ একটা ধর্মীয় ভাষণ শুনেছিলেন। সেই ভাষণ তাঁর মুখস্থ হয়ে যায় এবং পরবর্তী ঐ ভাষণের একজন বর্ণনাকারী হয়ে যান তিনি। তাঁর এই সচেতনতার জন্যে এবং তীক্ষ্ম স্মৃতিশক্তির জন্যে বয়সকালে তাঁকে সবার কাছেই 'আকিলা' উপাধিতে পরিচিত ছিলেন। আকিলা মানে হলো বুদ্ধিমতী ও চিন্তাশীল রমণী।


তাঁর জীবনে বিপদের ঘূর্ণিঝড় অতি দ্রুতই ঘনিয়ে আসে। তিনি শিশু বয়সে প্রিয় নানা হযরত মুহাম্মাদ (সা.) কে হারান। তার অল্প পরেই হারান মা ফাতেমা (সা.) কে। এরপর তাঁকে লালন পালন পরার দায়িত্বভার অর্পিত হয় প্রিয় পিতা হযরত আলী (আ.) এর ওপর। পিতার তীক্ষ্ম জ্ঞান-গরিমা, আধ্যাত্মিকতা,নীতি-নৈতিকতা আর সচেতন প্রজ্ঞার ঐশ্বর্যে নিজেও সমৃদ্ধি অর্জন করেন এবং এভাবেই তিনি বেড়ে ওঠেন। যে সময়টায় অধিকাংশ নারীই ছিল প্রায় মূর্খ এবং নিরক্ষর,সে সময়টায় হযরত জয়নাব (সা.) ইসলামী সংস্কৃতির প্রচার ও প্রশিক্ষণে নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং তাঁর জ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার কথা সবার কানে পৌঁছে যায়। তাঁর প্রশিক্ষণ ক্লাসে কোরআন তাফসিরের ক্লাসে যোগ দেওয়ার জন্যে নারীরা ছিল উদগ্রীব। তিনি যতদিন মদিনায় ছিলেন ততদিন মদিনার মানুষ তাঁর জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয় এবং যখন তিনি কুফায় অবস্থান করেছিলেন তখনো তিনি সেখানকার জনগণকে জ্ঞানের মহিমায় উদ্ভাসিত করেন।

জয়নাব (সা.) যখন বিয়ের বয়সে উপনীত হন, চাচাতো ভাই আব্দুল্লাহ ইবনে জাফরের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। আব্দুল্লাহ ইবনে জাফর ছিলেন সে সময়কার আরবের একজন ধনী ব্যক্তি। কিন্তু জয়নাব (সা.) কখনোই বস্তুতান্ত্রিক জীবনের সাথে নিজেকে জড়ান নি। উন্নত চিন্তাদর্শের অধিকারী ছিলেন বলে তিনি বস্তুতান্ত্রিক জীবনের বৃত্তে নিজেকে আবদ্ধ করেন নি। তিনি শিখেছিলেন,কখনোই এবং কোনোভাবেই অত্যাচারীদের লোভনীয় মোহের কাছে সত্যের মহামূল্যবান সম্পদকে বিসর্জন দেওয়া যাবে না। সে জন্যেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন,তাঁর ভাই ইমাম হোসাইন (আ.) এর সাথে দ্বীনকে উজ্জীবিত রাখার সংগ্রামে এবং সমাজ সংস্কারের পথে আত্মনিয়োগ করবেন। আব্দুল্লাহ ইবনে জাফরের সাথে বিয়ের সময় জয়নাব (সা.) শর্ত দিয়েছিলেন যে তিনি সারাজীবন তাঁর ভাই ইমাম হোসাইন (আ.) এর পাশে থাকবেন। আব্দুল্লাহও তাঁর এই শর্ত মেনে নিয়েছিলো। সেজন্যেই তিনি ইমাম হোসাইন (আ.) এর মদিনা থেকে কারবালায় ঐতিহাসিক সফরকালে তাঁর সাথে গিয়েছিলেন এবং অত্যাচারী উমাইয়া শাসক ইয়াজিদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন।

হযরত জয়নাব (সা.) র ব্যক্তিত্বের সাথে পরিচিত হবার জন্যে সবচেয়ে উপযুক্ত উপায় হলো আশুরার ঐতিহাসিক ঘটনা সম্পর্কে পড়ালেখা করা এবং নবীজীর আহলে বাইতের সদস্যদের বন্দী হবার ঘটনা নিয়ে পড়ালেখা করা। ইতিহাসের এই ক্রান্তিলগ্নে জয়নাব (সা.) র ভূমিকা আজো জ্বলজ্বল করছে। তাঁর মাঝে ছিল নজিরবিহীন এক ব্যক্তিত্ব,আল্লাহকে তিনি যে কতোটা গভীরভাবে চিনেছিলেন,তা তাঁর ব্যক্তিত্বের মাঝে তাঁর কর্মতৎপরতায় ফুটে উঠতো। আল্লাহর ইবাদাতের প্রতি তাঁর ছিল প্রবল আকর্ষণ। নামায বা আল্লাহর স্মরণই ছিল তাঁর মানসিক প্রশান্তির কারণ। আল্লাহর নূর তাঁর অন্তরে এতোবেশি আলোকিত ছিল যে দুনিয়ার কোনো দুঃখ-কষ্টই তাঁর কাছে ততোটা গ্রাহ্য ছিল না।

মনোবিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে,রাগের সময় বা গভীর অনুভূতিশীল কোনো মুহূর্তে মানুষ তার ভেতরে যা লুকায়িত আছে সেসব প্রকাশ করে ফেলে। হযরত জয়নাব (সা.) ও তাঁর ভাই ইমাম হোসাইন (আ.) এবং তাঁর প্রিয়জনদের শাহাদাতের পর কঠিন সেই মুহূর্তে অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে,বীরত্বের সাথে এবং সুস্পষ্টভাবে বক্তব্য রেখেছিলেন। আল্লাহর প্রতি তাঁর যে গভীর আস্থা এবং নির্ভরশীলতা,তাঁর ভেতরে যে স্বাভাবিক ধৈর্যশক্তি,সেসবেরই প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন তিনি। তিনি রক্তপিপাসু উমাইয়া শাসকদের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। নবীজীর আহলে বাইতের সত্যতাকে সংরক্ষণ করেছিলেন এবং কারবালায় ইমাম হোসাইন (আ.) ও তাঁর সঙ্গী-সাথীদের বিজয় হয়েছে বলে ঘোষণা করেছিলেন। ইয়াজিদের দরবারে যিনি যেরকম ওজস্বিতার সাথে বক্তব্য রেখেছেন,তা সবার অন্তরে এমনভাবে গেঁথে গিয়েছিল যে,আলী (আ.) এর স্মৃতিকে সবার সামনে জাগ্রত করে তুলেছিল। তিনি সবসময় কোরআনের উদ্ধৃতি তুলে ধরে বক্তব্য রাখতেন যাতে প্রামাণ্য হয়।

ইবনে কাসির নামে একজন বাকপটু আরব ছিলেন। তিনি জয়নাব (সা.) এর বক্তৃতা শুনে এতোবেশি প্রভাবিত হয়ে পড়েন যে,একবার কাঁদতে কাঁদতে উচ্চস্বরে বলেছিলেন: "আমার বাবা-মা তোমার জন্যে উৎসর্গিত, তোমার গুরুজনেরা সবচেয়ে উত্তম মুরব্বি,তোমাদের শিশুরা সবচেয়ে ভালো এবং তোমাদের রমণীরা সর্বোত্তম নারী। তোমাদের বংশ সকল বংশের উপরে এবং কখনোই পরাজিত হবে না।"

হযরত জয়নাব (সা.) তাঁর পিতা ইমাম আলী (আ.) থেকে শুনেছিলেন যে, মানুষ ঈমানের হাকিকত উপলব্ধি করতে পারে না,যতক্ষণ না তার মাঝে তিনটি বৈশিষ্ট্য না থাকে। দ্বীনের ব্যাপারে সচেতনতা,দুর্দশায় ধৈর্য ধারণ করা এবং সৎ জীবন যাপন করা। এই মহিয়সী নারী কঠিন দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং ধৈর্যের অলংকার দিয়ে তিনি তাঁর মন এবং আত্মাকে সাজিয়েছেন। জয়নাব (সা.) র দৃষ্টিতে সত্যের পথে দাঁড়ানো এবং আল্লাহর পথে জীবন বিলানো এমন এক সৌন্দর্য যেই সৌন্দর্য মানবতার চিরন্তন প্রশংসার দাবিদার। এজন্যেই তিনি আশুরার ঐতিহাসিক ঘটনার পর অত্যাচারী শাসকদের লক্ষ্য করে বলেছিলেন-"আমি তো সৌন্দর্য ছাড়া অন্য কিছু দেখি না।"

হযরত জয়নাব (সা.আ.)’র শুভ জন্মবার্ষিকীতে আমাদের উচিত তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার ক্ষেত্রে সাহস সঞ্চয় করা। নিজের জীবনকে আল্লাহর কাছে সঁপে দিয়ে নির্বিঘ্নে আল্লাহর পথে সংগ্রাম করা। কায়েমি স্বার্থবাদীদের সাথে দ্বীনের ব্যাপারে কোনোরকম আপোষ না করার শিক্ষা লাভ করা এবং পার্থিব জগতের ধন-সম্পদকে তুচ্ছ জ্ঞান করে পরকালীন স্বার্থকে জীবনের সর্বোত্তম প্রাপ্তি হিসেবে গ্রহণ করা এবং তা অর্জনের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া। সকল কাজের ক্ষেত্রে আল্লাহর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দেয়া। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই তৌফিক দিন।#

No comments:

Post a Comment

.

.
..
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

BreaKingNew:

^ Back to Top