Aassalamu alikum how are you I hope you are all well. All the praise to Allah subhanahu oatala.I am Abu Saeid Studying MS in Food Processing and Preservation in Hajee Muhammad Danesh Science and Technology University, Dinajpur. Stay in Zia hall room no#226# 1st floor in HSTU campus, Basher hat, Dinajpur.

POSTS\\\\

Saturday, July 20, 2013


রমজান মাসের ফজিলত
Posted by QuranerAlo Editor • July ১২, ২০১৩ 
Top of Form
Bottom of Form

প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না


রহমান রহীম আল্লাহ্তায়ালার নামে-
Description: http://www.quraneralo.com/wp-content/uploads/2010/08/RAMADAN_KAREEM_by_ahmedstud.jpg
রমজান মাসের ফজিলত
রমজান মাসের আগমনে মুসলিমগণ আনন্দ প্রকাশ করে থাকেন। আনন্দ প্রকাশ করাই স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন :
قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ (يونس: 58)
বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে এটা তার চেয়ে উত্তম। [সূরা ইউনুস : ৫৮]

পার্থিব কোন সম্পদের সাথে আল্লাহর এ অনুগ্রহের তুলনা চলে না, তা হবে এক ধরনের অবাস্তব কল্পনা। যখন রমজানের আগমন হত তখন রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিশয় আনন্দিত হতেন, তার সাহাবাদের বলতেন :
أتاكم رمضان شهر مبارك
তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। এরপর তিনি এ মাসের কিছু ফজিলত বর্ণনা করে বলতেন :
فرض الله عز وجل عليكم صيامه، تفتح فيه أبواب السماء، وتغلق فيه أبواب الجحيم، وتغل فيه مردة الشياطين، لله فيه ليلة خير من ألف شهر، من حرم خيرها فقد حرم. رواه النسائي
আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল। বর্ণনায় : নাসায়ী 
আমাদের কর্তব্য : আল্লাহর এ অনুগ্রহের মূল্যায়ন করতে চেষ্টা করা, এ মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য অনুধাবনে সচেষ্ট হওয়া ও ইবাদত-বন্দেগিসহ সকল কল্যাণকর কাজে নিয়োজিত থাকা।
এ মাসের যে সকল ফজিলত রয়েছে তা হল :
এক. এ মাসের সাথে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকনের সম্পর্ক রয়েছে ; আর তা হলে সিয়াম পালন।
হজ যেমন জিলহজ মাসের সাথে সম্পর্কিত হওয়ার কারণে সে মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে এমনি সিয়াম রমজান মাসে হওয়ার কারণে এ মাসের মর্যাদা বেড়ে গেছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন :
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ. سورة البقرة : 183
হে মোমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর-যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার। [সূরা বাকারা : ১৮৩]
রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ইসলাম যে পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত তার একটি হল সিয়াম পালন। এ সিয়াম জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম ; যেমন হাদিসে এসেছে :
من آمن بالله ورسولـه، وأقام الصلاة، وآتى الزكاة، وصام رمضان، كان حقاً على الله أن يدخله الجنة ... رواه البخاري
যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, জাকাত আদায় করল, সিয়াম পালন করল রমজান মাসে, আল্লাহ তাআলার কর্তব্য হল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো...। বোখারি
দুই. রমজান হল কোরআন নাজিলের মাস : আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন -
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآَنُ هُدًى لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ : البقرة : 184
রমজান মাস, এতে নাজিল হয়েছে আল-কোরআন, যা মানুষের দিশারি এবং স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। সূরা বাকারা : ১৮৪
রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র আল-কোরআন একবারে নাজিল হয়েছে। সেখান হতে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি নাজিল হতে শুরু করে। কোরআন নাজিলের দুটি স্তরই রমজান মাসকে ধন্য করেছে। শুধু আল-কোরআনই নয় বরং ইবরাহিম আ.-এর সহিফা, তাওরাত, যবুর, ইঞ্জিল সহ সকল ঐশী গ্রন্থ এ মাসে অবতীর্ণ হয়েছে বলে তাবরানী বর্ণিত একটি সহি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। (সহি আল-জামে)
এ মাসে মানুষের হেদায়াত ও আলোকবর্তিকা যেমন নাজিল হয়েছে তেমনি আল্লাহর রহমত হিসেবে এসেছে সিয়াম। তাই এ দুই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বেশি বেশি করে কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। প্রতি বছর রমজান মাসে জিবরাইল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ও তাকে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন। আর জীবনের শেষ রমজানে আল্লাহর রাসূল দু বার পূর্ণ কোরআন তিলাওয়াত করেছেন। সহি মুসলিমের হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত।
তিন. রমজান মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় ও জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় শয়তানদের। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
إذا جاء رمضان فتحت أبواب الجنة، وأغلقت أبواب النار، وصفدت الشياطين. وفي لفظ : (وسلسلت الشياطين) رواه مسلم
যখন রমজান মাসের আগমন ঘটে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের আবদ্ধ করা হয়। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে-শয়তানের শিকল পড়ানো হয়। (মুসলিম)
তাই শয়তান রমজানের পূর্বে যে সকল স্থানে অবাধে বিচরণ করত রমজান মাস আসার ফলে সে সকল স্থানে যেতে পারে না। শয়তানের তৎপরতা দুর্বল হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় ব্যাপকভাবে মানুষ তওবা, ধর্মপরায়ণতা, ও সৎকর্মের দিকে অগ্রসর হয় ও পাপাচার থেকে দূরে থাকে। তারপরও কিছু মানুষ অসৎ ও অন্যায় কাজ-কর্মে তৎপর থাকে। কারণ, শয়তানের কু-প্রভাবে তারা অনেক বেশি প্রভাবিত হয়ে পড়েছে।
চার. রমজান মাসে রয়েছে লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তাআলা বলেন :
لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ ﴿3﴾ تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ ﴿4﴾ سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ ﴿5﴾ (القدر: 3-5)
লাইলাতুল কদর সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সে রজনি উষার আবির্ভাব পর্যন্ত। [সূরা আল-কদর : ৩-৫] 
পাঁচ. রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :
لكل مسلم دعوة مستجابة، يدعو بـها في رمضان. رواه أحمد
রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়। (মুসনাদ আহমদ)
অন্য হাদিসে এসেছে -
إن لله تبارك وتعالى عتقاء في كل يوم وليلة، (يعني في رمضان) وإن لكل مسلم في كل يوم وليلة دعوة مستجابة. صحيح الترغيب والترهيب.
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রমজানের প্রতি রাতে ও দিনে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন এবং প্রতি রাত ও দিবসে মুসলিমের দোয়া-প্রার্থনা কবুল করা হয়। (সহি আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব)
তাই প্রত্যেক মুসলমান এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের কল্যাণের জন্য যেমন দোয়া-প্রার্থনা করবে, তেমনি সকল মুসলিমের কল্যাণ, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জ্ঞাপন করবে।
ছয়. রমজান পাপ থেকে ক্ষমা লাভের মাস। যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপসমূহ ক্ষমা করানো থেকে বঞ্চিত হলো আল্লাহর রাসূল তাকে ধিক্কার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন :
.. رغم أنف رجل، دخل عليه رمضان، ثم انسلخ قبل أن يغفر له. .رواه الترمذي
ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় ধূসরিত হোক যার কাছে রমজান মাস এসে চলে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করা হয়নি। (তিরমিজি)
সত্যিই সে প্রকৃত পক্ষে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত যে এ মাসেও আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল।
সাত. রমজান জাহান্নাম থেকে মুক্তির লাভের মাস, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
إذا كان أول ليلة من رمضان صفدت الشياطين ومردة الجن، وغلقت أبواب النار، فلم يفتح منها باب، وفتحت أبواب الجنة فلم يغلق منها باب، وينادي مناد كل ليلة : يا باغي الخير أقبل! ويا باغي الشر أقصر! ولله عتقاء من النار، وذلك في كل ليلة. رواه الترمذي
রমজান মাসের প্রথম রজনির যখন আগমন ঘটে তখন শয়তান ও অসৎ জিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, এ মাসে আর তা খোলা হয় না। জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, এ মাসে তা আর বন্ধ করা হয় না। প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে ঘোষণা দিতে থাকে যে, হে সৎকর্মের অনুসন্ধানকারী তুমি অগ্রসর হও ! হে অসৎ কাজের অনুসন্ধানকারী তুমি থেমে যাও ! এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।  (তিরমিজি)
আট. রমজান মাসে সৎকর্মের প্রতিদান বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। যেমন হাদিসে এসেছে যে, রমজান মাসে ওমরাহ করলে একটি হজের সওয়াব পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, বরং, রমজান মাসে ওমরাহ করা আল্লাহর রাসূলের সাথে হজ আদায়ের মর্যাদা রাখে। এমনিভাবে সকল ইবাদত-বন্দেগিসহ সকল সৎকাজের প্রতিদান কয়েক গুণ বেশি দেয়া হয়।
নয়. রমজান ধৈর্য ও সবরের মাস। এ মাসে ঈমানদার ব্যক্তিগণ খাওয়া-দাওয়া, বিবাহ-শাদি ও অন্যান্য সকল আচার-আচরণে যে ধৈর্য ও সবরের এত অধিক অনুশীলন করেন তা অন্য কোন মাসে বা অন্য কোন পর্বে করেন না। এমনিভাবে সিয়াম পালন করে যে ধৈর্যের প্রমাণ দেয়া হয় তা অন্য কোন ইবাদতে পাওয়া যায় না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন :
إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ. الزمر: 10
ধৈর্যশীলদের তো বিনা হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে। [সূরা যুমার : ১০]



From Salafibd

Description: https://fbcdn-sphotos-d-a.akamaihd.net/hphotos-ak-ash3/581642_4973872224692_82932821_n.jpg
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন, ওয়াস্ স্বালাতু ওয়াস সালামু আলা রাসূলিহিল কারীম, আম্মা বাদ।
ভাই মুসলিম! আমাদের মাঝে প্রতি বছরে রামাযান মাস আসে আর চলে যায়। আগমনের সাথে সাথে মুসলিম সমাজে মুসলিম পরিবারে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়
  • -দেখা যায় মসজিদের কাতারে নামাযীর আধিক্য
  • -আযানের সাথে সাথে বেশ কিছু লোকের মসজিদে আগমন
  • -এবং তারাবীহর নামায আদায়ের জন্য ছোট-বড় অনেক লোকের মসজিদে অপেক্ষা
  • দেখা যায় কিছু লোকের পরিধানে পরিবর্তন
  • -সুন্দর পাঞ্জাবী টুপি, যা তারা অন্য দিনে খুব কমই গায়ে দেয় কিন্তু এই মাসে প্রায় সময় তাদের শরীরে এই রকম লেবাস সজ্জা পায়
দেখা যায় বিনোদনে পরিবর্তন
  • -যারা অন্য দিনে আশঙ্কামুক্ত হয়ে টেলিভিশন, নেট, ফেসবুক মোবাইলে গান-বাজনা সহ অন্যান্য হারাম বিনোদনে লিপ্ত থাকতো, তারা অনেকে এই মাসে অনেকটা সংযত হয়ে যায়
  • -অনেকে টেলিভিশনের ক্যাবেল সংযোগ কেটে দেয়, মোবাইলের রিং টোন পাল্টে দেয় এবং এই রকম আরো অন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে
দেখা যায় বাড়ির ভিতরের পরিবেশে পরিবর্তন
  • অনেকের বাড়ির ভিতর থেকে ভেসে আসতে শুরু করে কুরআন তেলাওয়াতের সুর
  • মহিলারা মাথায় ঘোমটা টেনে গুণ গুণ সুরে পড়তে থাকে কুরআন মজীদ
  • অনেকের টেপ রেকোর্ডার ডি.ভি.ডি. প্লেয়ারে গানের বদলে বাজতে লাগে কারী সাহেবের তিলাওয়াত নচেৎ গজল ইসলামী সঙ্গীত
দেখা যায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর সাধুত্ব
  • অন্য দিনে যারা দুধে পানি মিশ্রণ করে বিক্রি করত, কলাই, গম এবং সরিষায় পাথরের কুচি মিশ্রণ করে মালের ওজন বৃদ্ধি করত, মুদিখানার বিভিন্ন সামগ্রীতে বিভিন্ন কিছু মিক্চার করে বিনা দ্বিধায় গ্রাহকের হাতে তুলে দিত, তারা অনেকে এই মাসে এইসব অসাধু কাজে লাগাম দিয়ে এক মাসের জন্য সাধু ব্যবসায়ী হওয়ার চেষ্টা করে
দেখা যায় বদান্যতা। অনেক মুসলিম ভাইর হাত এই মাসে প্রশস্ত হয়ে যায়
  • তাই কেউ কাপড়-চপড় বিতরণ করে,
  • কেউ মসজিদ মাদ্রাসায় দান-খয়রাত করে
  • এবং কেউ যাকাত বের করে। যার ফলে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে চাঁদা আদায়কারীর সংখ্যাও বেড়ে যায়
দেখা যায় ধুমপায়ী নেশাখোর ব্যক্তিদের সংযত হতে
  • তাই দিনের বেলায় তাদের বিড়ি-সিগারেট টানতে দেখা যায় না,
  • হাতে খয়নি ডলে তাতে ফুৎকার দিতে দেখা যায় না
  • এমনকি পানের দোকানে পান খেতে গুটকার পুরিয়া মুখে পুরতে দেখা যায় না
  • প্রায় প্রত্যেক পান, বিড়ি, সিগারেট গুটকার দোকানের ব্যবসা মন্দা হয়ে পড়ে। তবে সূর্য্য ডুবলে তাদের ব্যবসা আবার অনেকটাই জমে উঠে
আর একটি বিষয় দেখা যায়, যা উল্লেখ না করলে এই অবস্থা বর্ণনার ইতি করা অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। তা হলো, দেশের সম্প্রচার মাধ্যমের সিডিউলে পরিবর্তন
  • রামাযান আসতেই টেলিভিশন রেডিওতে রবীন্দ্রসঙ্গীত, পল্লীগীতি, লোকগীতির স্থানে শুরু হয় ইসলামী সঙ্গীত ইসলামী নজরুলগীতি
  • মাঝে মাঝে কুরআন মজীদের অর্থ সহ তিলাওয়াত
  • সাহরী অনুষ্ঠান সহ ইফতারী অনুষ্ঠান
  • এছাড়া দৃষ্টি তখন ধোকা খায় যখন টেলিভিশনে মহিলা খবর পড়ুয়াদের দেখা যায়, তারা তাদের ১১ মাসের চিরাচরিত সাজ-সজ্জ্যা মলিন করে মাথায় কাপড় দিয়ে খবর পড়ে!
অতঃপর দীর্ঘ ৩০ দিনের এই আল্লাহ ভীরুতা, ঈমানী চেতনা, রামাযানী সভ্যতা, দ্বীনী অনুপ্রেরণা, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সুন্দর ইসলামী পরিবেশ মুখ থুবড়ে পড়ে, যখন পশ্চিম দিগন্তে ঈদের হেলাল উঁকি দেয়। ঈদের এই চাঁদ উঠার মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে সেই মুসলিম সমাজে দেখা দেয় এর বিপরীত করুণ পরিবর্তন। আপনি আপনার মসজিদে মাগরিবের নামায পড়ে ঈদের সুসংবাদ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন মাত্র। আর এর এক-দেড় ঘন্টা পর যখন ইশার নামাযে সেই মসজিদে যাবেন, তখন দেখেবেন মসজিদ খালি, /৭টি কাতারের মধ্যে প্রথম লাইনও ভর্তি হয়নি, মসজিদের খাদেম পিছনের লাইনগুলির জায়নামায জোড়াতে ব্যস্ত।
বাড়ি ফিরেই সেই রেডিও টেলিভিশনগুলিতে দেখবেন ডিং ডাং শুরু হয়ে গেছে। খবর পড়ুয়াদের মাথা থেকে ঘোমটা সরে গেছে, চলছে বাজনা সহকারেরামযানের রোযার শেষে এলো খুশীর ইদ ধুমপায়ী নেশাখোররা সানন্দে সস্থির নিঃশ্বাস ছেড়ে বিড়ি-সিগারেট টানছে নেশা করছে আর মনে মনে বলছেঃ বাঁচলাম! বিড়ি-তামাক না খেলে ভাত হজম হয় কি! অথচ একমাস যাবৎ তাদের বদ হজম হয়নি। সত্যিকারে রামাযান মাসে এই রকম লোকের চেহারা ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হয়, তাদের চেহারায় একটি জ্যোতি প্রকাশ পায় কিন্তু তারা এই মূল্যবান জ্যেতির হেফাজত না করে আবার অন্ধকারের মরিচা লাগাতে থাকে। বাড়িতে কুরআন তেলাওয়াতের শব্দ আর শোনা যায় না বরং অনেকে তা কাপড়ের গেলাফে জোড়িয়ে আলমারীতে রেখে দেয়। ইসলামী পোষাক আর গায়ে থাকে না, টুপি আর মাথায় শোভা পায় না। এই ভাবে বাকি অন্যান্য ভাল স্বভাবগুলি পুনরায় কুস্বভাবে পরিবর্তন হওয়ার অনুমান করা যেতে পারে।
এছাড়া কিছু মডার্ন নামের মুসলিম পরিবার এমনও আছে যারা, রোযা-নামাযের তেমন ধার ধারে না তবে ঈদ পালনে পাকা মুসলমান। তারা ঈদের দিনটিকে উপভোগ করার উদ্দেশ্যে সেই রাতেই রুটিন তৈরি করে। কি ভাবে কতপ্রকার আনন্দ-বিনোদনে ঈদ কাটাতে হবে? তার পুরো সেটিং করে নেওয়া হয়। পরের দিন রুটিন মত শুরু হয়, পরিবার সহ সিনেমা দর্শন, গান-বাজনার আয়োজন, বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ডের সাথে সাক্ষাৎ গিফ্ট আদান-প্রদান, মদ পানের পার্টি ইত্যদি।
এই ভাবে আমরা অনেকে রোযা পালন করি, ঈদ উদযাপন করি কিন্তু আবার পূর্বের জীবন-যাত্রায় ফিরে আসি। রোযা তথা রামাযান আমাদের জীবনে কোন পরিবর্তন আনে না, কোন প্রকার প্রভাব ফেলে না। কারণ কি?
  • -আসলে স্বয়ং আমরাই পরিবর্তন চাই না। আমরাই আমাদের জীবনের দ্বীনী পরিবর্তনে অনিচ্ছুক। না হলে ভেবে দেখুন, রোযার মাসে কিন্তু আপামর জীবনে অনেক পরিবর্তন ছিল বা হয়েছিল কিন্তু সেই পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা আমরাই পরে রক্ষা করি না। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
(إن اللهَ لا يغيّرُ ما بقومِ حتّى يُغيّروا ما بأنفسهم) الرعد/11
আল্লাহ কোন সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজেরাই তাদের অবস্থা পরিবর্তন করে।” [সূরা রাআ/১১]
  • - এই প্রকার রোযাদাররা তাদের সাউম পালনে আন্তরিক নয়। তাই যখন রোযার মাস আসে, তখন শুরুতেই তারা ভেবে নেয় যে, এটা রোযার মাস তাই একটু ভাল হয়ে থাকতে হবে, কিছুটা সংযত হতে হবে। অতঃপর রোযা শেষ হলে পূর্বে যেমন ছিলাম তেমনই থাকবো। বুঝা গেল, তারা রোযা পালনে আন্তরিক নয়, খাঁটি নয়; কারণ সে এই মাসের পর পুনরায় মন্দের দিকে ফিরে যাওয়ার গোপন ইচ্ছা রাখে। বলুনতো, আল্লাহ কি আমাদের এই গোপন নিয়তটির খবর রাখেন না? মনে রাখতে হবে, আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আন্তরিক খাঁটি ভাবে ইবাদত না করলে তা আল্লাহর নিকট গ্রহণ হয় না। মহান আল্লাহ বলেনঃ
(وَ ما أمِروا إلا ليعبدوا اللهَ مُخْلصينَ له الدّينَ حُنفآءَ) البينة/5
তাদের ছাড়া অন্য কোন আদেশ দেয়া হয়নি যে, তারা আল্লাহর ইবাদত করবে খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে।” [সূরা বাইয়্যিনাহ/]
  • - আসলে সমাজের অনেকাংশে রোযা এখন ইবাদত হিসাবে নয় বরংআদতহিসাবে পালিত হচ্ছে। অর্থাৎ, মাস রোযা পালন যে আল্লাহ আমাদের প্রতি ফরয করেছেন, এটি যে আল্লাহ প্রদত্ত একটি ফরয ইবাদত, এটা যে তাঁরই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করতে হবে, কেবল সওয়াব অর্জনের উদ্দেশ্যেই হতে হবে, এমন উদ্দেশ্যে তা সম্পাদন না করে সমাজের আচার রক্ষার্থে বা সমাজের লোকের দেখা-দেখি পালন করা হচ্ছে। অনেকে মনে করছে, রোযা না রাখলে গ্রামের বা সমাজের লোকেরা কি বলবে!? অনেকে নেকীর উদ্দেশ্যে কম আর পার্থিব লাভের আশায় বেশী পালন করে। বলেঃ রোযা রাখলে শরীরের ওজন কম হবে, শুগার কন্ট্রোলে থাকবে, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে ইত্যাদি। অথচ রোযা তখন ক্ষমার মাধ্যম হয়, যখন রোযাদার কেবল ঈমান সওয়াব অর্জনের আশায় তা সম্পাদন করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
” من صام رمضان إيمانا و احتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه” رواه البخاري، رقم 1901
যে ব্যক্তি ঈমান নেকীর আশায় (আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে) রামাযান মাসের রোযা পালন করবে, তার বিগত সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হবে [বুখারী, নং১৯০১]
  • - আমরা রোযাদার কিন্তু রোযার রহস্য মর্মাথ বুঝি না। আমরা এক মাস পানাহার থেকে বিরত থাকাকেই রোযার উদ্দেশ্য মনে করি। কিন্তু চিন্তা করার প্রয়োজন আছে যে, এই এক মাসের ইবাদত, সংযম পরহেযগারীতা আমাদের মানসিক ভাবে প্রস্তুত করে না কি যে, আমরা আগামী এক বছর তথা ভবিষ্যতে ধারাবাহিক সংযমে অভ্যস্ত হব। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃযে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা তার উপর অটল থাকা হতে বিরত থাকে না, আল্লাহর নিকট এইরকম লোকের পানাহার করা না করার কোনো প্রয়োজন নেই [বুখারী, অধ্যায়, সাউম, নং ১৯০৩]
হে রোযাদার মুসলিম ভাই! মনে রাখবেন, যিনি রামাযান মাসে আল্লাহ তিনি অন্য মাসেও মহান আল্লাহ। যিনি রামাযান মাসে সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা, তিনি অন্য মাসেও সেই গুণের অধিকারী। যিনি রোযার মাসে মাবুদ, তিনি অন্যান্য সময়েও উপাস্য। আর আমরা তাঁর গোলাম বা দাস। সবসময় ধারাবাহিক দাসত্ব করাই এক বান্দার মূল কর্তব্য
মহান আল্লাহ বলেনঃ
  • তুমি তোমার প্রভুর ইবাদত করো যতক্ষণে মৃত্যু না আসে।) [সূরা হিজর/৯৯]
  • আয়েশা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃতোমরা জেনে রেখো অবশ্যই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় আমল হচ্ছে, ধারাবাহিক আমল যদিও তা অল্প হয় [মুসলিম, অধ্যায়, মুনাফেকদের স্বভাব তাদের বিধান, নং ৭৩০০]
  • একাধিক সালাফ হতে প্রমাণিত, তারা বলতেনঃকত নিকৃষ্ট সেই সম্প্রদায়, যারা রামাযান মাস ছাড়া অন্য সময়ে আল্লাহকে চিনে না
হে রোযার মাসে সংযমী ভাই! যদি আপনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে ১২-১৪ ঘন্টা পানাহার অশ্লীলতা থেকে সংযমী হতে পারেন, তো ১২ মাসেও সংযম থাকার ক্ষমতা রাখেন। যদি ১২-১৩ ঘন্টা ধূমপান তথা অন্যান্য নেশা ত্যাগ করতে পারেন, তো ১২ মাস তথা ১২ বছরও তা পারেন। রোযার মাসে যদি হারাম ব্যবসা ত্যাগ করতে পারেন তো অন্য মাসেও তা পারেন। রামাযান মাসে যদি নিয়মিত কুরআন পড়তে পারেন, তো অন্য মাসেও তা পারেন। এই মাসে যদি ফজরের নামায জামাআতে আদায় করতে পারেন, তো অন্য মাসেও তা সম্ভব। এই মাসে যদি নফল নামায দান-খয়রাত করতে সক্ষম হোন, তো অন্য মাসেও তা সম্পাদন করতে সক্ষম হবেন
তবে প্রয়োজন আছেঃ-
  • প্রয়োজন আছে দৃঢ় সংকল্পের; কারণ সত্য সংকল্প, অসাধ্যকে সাধ্য করে, কঠিনকে সহজ করে এবং ইচ্ছা পূরণে সাহায্য করে। তার সাথে দরকার আছে স্থিরতা ধৈর্যের। ইবনুল ক্বাইয়্যূম (রহ) বলেনঃমানুষ দৃঢ় সংকল্প স্থায়িত্বের মাধ্যমে পূর্ণতা লাভ করে। যার সংকল্প নেই সে অসম্পূর্ণ। আর যার সংকল্প আছে কিন্তু তার প্রতি তার স্থায়িত্ব নেই, সেও অসম্পূর্ণ। অতঃপর যখন সংকল্পের সাথে স্থায়িত্বের সংযোগ হয়, তখন পূর্ণতা লাভ হয়। এই কারণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দুআয় উল্লেখ হয়েছে, যা ইমাম আহমদ ইবনু হিব্বান তাঁর সহীহ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেনহে আল্লাহ! আমি প্রত্যেক বিষয়ে স্থায়িত্ব এবং সততার দৃঢ়তা প্রার্থনা করছি আর একথা সর্বজন বিদিত যেধৈর্যের মেরুদণ্ড ছাড়া স্থায়িত্ব সংকল্পের বৃক্ষ দণ্ডয়মান হয় না [ত্বরীকুল হিজরাতাঈন, /৪০১]
প্রয়োজন আছে রাঙ্গা চোখে, অভিশপ্ত শয়তানকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে যে, রামাযান মাসে যেমন আমি তোমার অনুসরণ করি নি, তোমার বন্ধু হয়নি, তোমার সুরে সুর মিলায় নি, তেমন অন্য মাসেও তোমার ধার ধারি না, তোমার সামান্যতমও সঙ্গ দিতে পারি না কারণ; তুমি আমার স্পষ্ট দুশমন। সত্যিকারে এই মরদূদ শয়তান রামাযান শেষে শিকল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর যখন দেখে তার সঙ্গী-সাথী অনেক কমে গেছে, তখন সে মরিয়া হয়ে আবার তাদের নিজ দলে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চালায়। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
(إنّ الشيطانَ لكم عدوٌ فاتّخذهُ عدوّاً، إنما يدعواْ حزبهُ ليكونوا من أصحابِ السعير) [الفاطر/6]
শয়তার তোমাদের শত্রু। কাজেই তাকে শত্রু হিসেবে গ্রহণ কর। সে কেবল তার দলবলকে ডাকে, যাতে তারা জ্বলন্ত অগ্নির সঙ্গী হয়।” [সূরা ফাতির/]
  • আর সবের পূর্বে অবশ্যই প্রয়োজন আছে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনার, যেন তিনি আমাদের দ্বীনে অবিচল রাখেন, সৎ কাজে ধারাবাহিকতা প্রদান করেন এবং তা কবূল করেন। কারণ তিনিই সঠিক পথ প্রদর্শক, বান্দার আমল কবূল কারী তাওফীক দাতা। আল্লাহ বলেনঃ (আর তাঁকে ভয়-ভীতি আশা-ভরসা নিয়ে ডাকতে থাক, আল্লাহর দয়া তো তাদের নিকটে যারা সৎ কাজ করে।) [রাফ/৫৬আল্লাহুল মুওয়াফফিক ওয়াল মুস্তাআন। 
লেখক: আব্দুর রকীব, মাদানী
দাঈ, দাওয়া সেন্টার, খাফজী, সউদী আরব

.

.
..
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

BreaKingNew:

^ Back to Top